ব্যাংক ও শেয়ার বাজার থেকে ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও তার পরিবারের সদস্যদের মোট ৭৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ আদেশ দেন।
অ্যাকাউন্টগুলো নাফিজ সরাফত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ এবং তাদের ছেলে চৌধুরী রহিব সাফওয়ান সরাফাতের বলে জানা গেছে।
তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের আদেশ চেয়ে দুর্নীতিত দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. মাসুদুর রহমান আদালতে আবেদন করেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর রুহুল ইসলাম খানের দাখিল করা আবেদনে বলা হয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ঘুষ, জালিয়াতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি এবং প্রায় ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত চলছে। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই, যথাযথ তদন্তের স্বার্থে অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গত ২২ জানুয়ারি একই আদালত নাফিজ সারাফাতের দুবাইয়ের তিন বেডরুমের একটি ফ্ল্যাট এবং পাঁচ রুমের একটি ভিলা বাজেয়াপ্ত করতে দুদককে নির্দেশ দেন।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘মরুর শহরে বাংলাদেশিদের সম্পদের পাহাড়’ শীর্ষক প্রতিবেদনে নাফিজ সরাফতের দুবাইয়ের বুর্জ খলিফার কাছাকাছি এলাকায় দ্য সিগনেচারের ৫০ তলা ভবনের ২৪ তলায় প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা তিন বেডরুমের ফ্ল্যাট ও দামাক হিলসের শান্ত আবাসিক এলাকায় পাঁচ বেডরুমের ভিলার কথা উল্লেখ করা হয়।
সারাফাত তার বিরুদ্ধে চলমান তদন্তের কথা উল্লেখ করে তার দুবাইয়ের সম্পত্তির বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, অনাবাসী বাংলাদেশি ও দ্বৈত নাগরিকত্বধারীরা বিদেশে সম্পদের মালিক হতে পারেন।
এছাড়া ৭ জানুয়ারি আদালত দুদককে ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী ও তাদের ছেলের মালিকানাধীন ২২টি ফ্ল্যাট বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর, একই আদালত সরাফাতের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
শেখ হাসিনার শাসনামলে পুলিশ ও গোয়েন্দা শাখার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সহায়তায় নাফিজ সরাফত পদ্মা ব্যাংক দখলে নেন বলে অভিযোগ আছে।
গত বছরের জানুয়ারিতে স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে সরাফাত পদ্মা ব্যাংকের (পূর্বে ফারমার্স ব্যাংক) চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
খুলনা গেজেট/এএজে